ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৪ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২০ ১৪৩১

বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক হচ্ছে, কমবে লোডশেডিং

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:২৮, ২ জুলাই ২০২৪  

বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক হচ্ছে, কমবে লোডশেডিং

বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক হচ্ছে, কমবে লোডশেডিং

ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে সারাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ভেঙে পড়েছিল। এর পর ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুতের খুঁটি, ট্রান্সফরমার, বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালন লাইন ও সাবস্টেশন সারিয়ে তুলতে সময় লাগে। ভাসমান দুটি এলএনজি টার্মিনালের মধ্যে সামিট পাওয়ারের একটি এলএনজি টার্মিনাল বিকল হয়ে যায় রিমালে। ফলে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ কমে যায়। অন্যদিকে গত কয়েক দিন ভারতের আদানি পাওয়ার থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে গিয়েছিল, গত শুক্রবার তা পুরোপুরিই বন্ধ হয়ে যায়। দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রার একটি ইউনিট সংস্কারের জন্য বন্ধ রাখার কারণে প্রায় সাড়ে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। সব মিলিয়ে গত এক মাস চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে যায় অনেক বেশি। ফলে দেশব্যাপী লোডশেডিংয়ের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে জনসাধারণকে। তবে গতকাল সোমবার থেকে আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ বিষয়ে বলেন, নানা কারণে মাঝখানে কিছু দিন বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। এখন আশা করছি দ্রুত আবার সব ঠিক হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে আদানি থেকে ৭০২ মেগাওয়াট

বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পুরোপুরি বিদ্যুৎ আসা শুরু হবে। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রেও আজকের মধ্যেই (সোমবার) বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে।

জানা গেছে, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে দ্বিতীয় ইউনিটের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষে পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। আদানি গ্রুপের একটি ইউনিটের ত্রুটি মেরামতের পর সেটি

থেকেও শুরু হয়েছে উৎপাদন। অন্য ইউনিটটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রয়েছে এখনো। সেটি ৫ জুলাইয়ের মধ্যে উৎপাদনে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গতকাল থেকে আদানির একটি ইউনিট এবং পায়রার একটি ইউনিট উৎপাদনে আসায় জাতীয় গ্রিডে ফের প্রায় ১৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ বেড়েছে। এতে চলমান লোডশেডিং কমবে বলে আশা করছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।

পায়রার দ্বিতীয় ইউনিটের রক্ষণাবেক্ষণ শেষ হওয়ার পর গতকাল বিকাল ৪টার দিকে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সিনক্রোনাইজিং করা হয়। এরপর আস্তে আস্তে ৪টা ৪০ মিনিট থেকে উৎপাদন বাড়তে থাকে। গত ২৫ জুন থেকে ওই ইউনিটের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়।

ভারতের ঝাড়খন্ডে আদানি গ্রুপের ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রায় ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করে বাংলাদেশ। ঈদের ছুটিতে চাহিদা কম থাকায় ৮০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট রক্ষণাবেক্ষণে যাওয়ায় উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসে। অন্য ইউনিটে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় মঙ্গলবার থেকে উৎপাদন কমে ৩৭০ মেগাওয়াটে দাঁড়ায়। শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে সেটিও বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে সাগরে এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালানো যাচ্ছে না গ্যাসের অভাবে। উচ্চমূল্যের তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালিয়ে লোডশেডিং পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছিল। এখন সেই চাপ কিছুটা কমবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পিডিবিসূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রতিদিন অন্তত ১১০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের দরকার। সরবরাহ করা হচ্ছে গড়ে প্রায় ৯৫ কোটি ঘনফুট। ফলে অনেক গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের একটি পরিকল্পনা থেকে দেখা যায়, ৬ জুলাই পর্যন্ত চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাতে সর্বোচ্চ চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন গড়ে ১৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা থাকবে। যার পুরোটাই উৎপাদন করতে সক্ষম পিডিবি।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়