ঢাকা, মঙ্গলবার   ০২ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৮ ১৪৩১

বরাদ্দের চেয়ে কম খরচে শেষ হয়েছে পদ্মাসেতু প্রকল্প

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:০১, ৩০ জুন ২০২৪  

বরাদ্দের চেয়ে কম খরচে শেষ হয়েছে পদ্মাসেতু প্রকল্প

বরাদ্দের চেয়ে কম খরচে শেষ হয়েছে পদ্মাসেতু প্রকল্প

উত্তাল পদ্মার বুকে নির্মিত পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজ রোববার (৩০ জুন) শেষ হচ্ছে। বিশাল এই কর্মযজ্ঞ সমাপ্তে বরাদ্দকৃত অর্থ ছিল ৩২ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। তবে চূড়ান্ত বিলে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা কম খরচ হয়েছে।পদ্মাসেতু সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মূল সেতুর ১৩ হাজার ১৩৩ কোটি খরচে সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ৫২৬ কোটি টাকা। তবে নদী শাসনে বেশি লেগেছে প্রায় ১৭১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। রোববার বাঙালির সক্ষমতার স্মারক পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সমাপনী। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মাসেতু প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ৫ জুলাই মাওয়া যাচ্ছেন।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ১৩ হাজার ৬৫৯ কোটির সবশেষ বরাদ্দের বিপরীতে মূল সেতুতে খরচ হয়েছে ১৩ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা, সাশ্রয় হয়েছে ৫২৬ কোটি। অ্যাপ্রোচ রোডে সাশ্রয় ১৮৫ কোটি টাকা। তবে নদী শাসনে বেশি লেগেছে প্রায় ১৭১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। আর প্রাইস কন্টিজেন্সি ও ফিজিক্যাল কন্টিজেন্সির ৫০০ কোটি করে ১০০০ কোটি টাকার পুরোটাই সাশ্রয় হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ৯৯০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৩ বছর আগে ২০০১ সালের ৪ জুলাই মাওয়ায় এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ফিরে ২০০৯ সাল থেকে আবার পুরোদমে কাজ শুরু করে। ২০১০ সালের ১১ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করা হয়। পরের বছর ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল পদ্মার বুকে চলন্ত ফেরিতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। পরবর্তীতে জাইকা, আইডিবি ও এডিবির সঙ্গে ঋণচুক্তি হয়।

তবে দুর্নীতি অভিযোগ উত্থাপন করে অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ায় বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংককে অনুসরণ করে এডিবি ও জাইকা সরে যায়। অনেক নাটকীয়তা, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ ও টানটান উত্তেজনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব বাঁধাকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়ে নিজেদের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। এরপর থেকে নতুন করে আবারো কর্মযজ্ঞ শুরু হয়।

স্বপ্নের এই সেতু নির্মাণের পেছনে ছিলেন বাংলাদেশ, চীন ও ইউরোপের প্রায় ১ হাজার ২০০ প্রকৌশলী এবং ২০ হাজার শ্রমিক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হয় প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রাংশ। জার্মানি থেকে হ্যামার, লুক্সেমবার্গ থেকে রেলের স্ট্রিংগার, চীন থেকে ট্রাস ও স্প্যান, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, হল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামকরা প্রকৌশলীদের পরামর্শক হিসাবেও সহযোগিতা নেয়া হয়।

সব কর্মযজ্ঞ সফল সম্পন্নের পর দেশ-বিদেশের প্রযুক্তি, মেধা ও শ্রম কাজে লাগিয়ে ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মাসেতু চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এখন প্রকল্পের সফল সমাপ্তির পর ৫ জুলাই মাওয়ায় সুধী সমাবেশ আসছেন প্রধানমন্ত্রী।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ রজব আলী বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সফল সমাপ্তির পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাঠে এসে সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রকল্পের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ক্লেইম ছিল। সেগুলো আমরা দীর্ঘ সময় নেগোশিয়েট করেছি। আমাদের এক্সপার্ট ছিল নিউজিল্যান্ড ও মালয়েশিয়ান। তাদের এক্সপার্ট ছিল আমেরিকান ও ব্রিটিশ। তারা দীর্ঘ আলোচনা করেছে।

এদিকে ২০২২ সালের ২৬ জুন থেকে চালু হওয়া পদ্মাসেতুর রাজস্ব আদায় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই করছে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়