ঢাকা, সোমবার   ২৪ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ৯ ১৪৩১

নিজে সুফল পাবে না বলে বিএনপিকে নির্বাচনে যেতে দেয় না তারেক : ওবায়দুল কাদের

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৫৬, ১৫ জুন ২০২৪  

নিজে সুফল পাবে না বলে বিএনপিকে নির্বাচনে যেতে দেয় না তারেক : ওবায়দুল কাদের

নিজে সুফল পাবে না বলে বিএনপিকে নির্বাচনে যেতে দেয় না তারেক : ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে ভালো করলে তার সুফল নিজে পাবেন না বলে দলকে নির্বাচনে যেতে দেন না তারেক রহমান। এ ছাড়া দলীয় নেতারা সংসদে গেলে তাঁর নিজের ক্ষমতা সংকুচিত হয়ে যাবে বলে তারেক দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে সংসদে পাঠানো থেকে বিরত রেখেছেন। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এখন দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে। বিএনপির টপ টু বটম—সবাই দুর্নীতিবাজ। এই দলের নেতা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া টপ টু বটম দুর্নীতির বরপুত্র।’ 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ভালো মানুষ সাজানোর জন্য মির্জা ফখরুল বিবৃতি দিয়েছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনি (মির্জা ফখরুল) তাদের নির্বাচিত ছয়জনকে সংসদে পাঠালেন। এখন যদি ফখরুল সংসদে যায়, তাহলে তারেকের ক্ষমতা সংকুচিত হয়ে যাবে—এ রকম একটা সাইকোলজি থেকে ফখরুলকে পার্লামেন্টে যাওয়া থেকে বিরত রেখেছে তারেক রহমান, এক ধমকে।’ 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল নিজেই তো স্বাধীন নন। তাঁর দলে কোনো পর্যায়ে কোনো সম্মেলনই হয় না, অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা হয় না। তারেকে রহমান বিদেশে থাকলে বিএনপি স্বাধীন সত্তা নিয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে অস্তিত্বের প্রকাশ ঘটাতে পারবে—সেটা আমরা বিশ্বাস করি না।’ 

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে বিএনপি আসবে না; নির্বাচনে বিএনপি যদি আসত গতবারের মতো ফলাফল হতো না—এটা আমি মনে করি। সার্বিক পরিস্থিতির কারণে অপজিশনের একটা ভোট ছিল। কিন্তু তারেক রহমান মনে করেন, যদি এই অবস্থায় বিএনপি ভালো করে, এটার সুফল তো আমি পাচ্ছি না। তারেক রহমান তো পাচ্ছে না। এখন তার অনুপস্থিতিতে অন্য কেউ নেতা হবে!’ 

সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ফখরুল সাহেব নিজেও অনুধাবন করতে পারছেন, তাঁকে কীভাবে তারেকের ধমকের ওপর চলতে হয়। এখন (মির্জা ফখরুল) বলেন, তাঁকে (তারেককে) শাস্তি দেওয়া যাবে না। শাস্তি তিনি তো পেয়েছেন, নতুন করে দেওয়ার কী আছে? তাঁর শাস্তি ভোগ করাই হচ্ছে বিষয়। তাঁকে এখানে (দেশে) এনে শাস্তি ভোগ করাতে হবে। সেটাই আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। শাস্তি দেওয়ার তো বিষয় না!’ 

তারেকের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এফবিআই ঢাকায় এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে, ট্যাক্স ফাঁকি—অর্থ পাচারের। সেই মামলার রায় হয়েছে। দেশের আদালত, বিচারব্যবস্থা বিএনপির বিরুদ্ধে গেলে তাদের নেতারা বিচারও মানে না, বিচারব্যবস্থা মানে না, আইন মানে না, আইনের শাসন তারা মানতে চায় না।’ 

অস্ত্র মামলা, দুর্নীতির মামলায় তারেকের সাজা হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘তারেকের আর কত সাজা হবে? তাঁর তো সাজা হয়েছে। শাস্তি হয়ে গেছে। এখন তাঁকে শাস্তি ভোগ করানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সে কথাই বলেছেন। তাঁকে ভালো মানুষ সাজানোর চেষ্টা করার কোনো কারণ নেই।’ 

বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা হঠাৎ করে এক কলমের খোঁচায় বাদ দিয়েছে। কারণ কী? কারণ হলো, ওই ৭ দফায় আছে দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বিএনপির কেউ নেতা হতে পারবে না। ওই ৭ ধারায় আছে, দুর্নীতিবাজ কোনো ব্যক্তি বিএনপির নেতা হতে পারবে না। ফখরুল তাঁকে (তারেককে) ভালো মানুষ সাজাচ্ছেন, তাহলে ধারাগুলো বাদ দিলেন কেন? দুর্নীতিবাজের যে ধারা আর দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির যে ধারা সেটাতে তারেক রহমান দোষী হয়ে যাচ্ছেন। সে জন্য হঠাৎ করে তারেকের নির্দেশে এক কলমের খোঁচায় বাদ দিয়ে নির্বাচন কমিশনে এনে জমা দিয়েছেন।’ 

বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এরা এ দেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, স্বাধীনতার আদর্শ মানে না। এরা এ দেশের গণতন্ত্রকে গিলে খেয়েছে। এরা এ দেশে লুটপাট করে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সেই বাংলাদেশকে অন্ধকার গহ্বর থেকে উদ্ধার করে আজকে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা, অর্থনীতির অগ্রযাত্রা, মুক্তিযুদ্ধের চিন্তাচেতনা বিকাশের অগ্রযাত্রার সাফল্য ফিরিয়ে এনেছেন।’ 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা আজ এসব কথা বলে অন্ধকারে ঢিল ছোড়েন, তাঁদের বলব—১৫ বছর আগে বাংলাদেশ কেমন ছিল? বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন ছিল? আর ১৫ বছর পরে কেমন হয়েছে? আমাদের ভুলত্রুটি আছে, এটা আমরা স্বীকার করে নেই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অতীতের ভুলত্রুটি থেকে আমরা শিক্ষা নেব।’

ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা, এটা কে বের করেছে? পুলিশ বের করেছে। পুলিশ কোন সরকারের? এটা কি বিএনপির আমলের পুলিশ নাকি শেখ হাসিনার আমলের পুলিশ। ডিবি ব্যাপারটা উদ্ঘাটন করেছে। মামলা হওয়ার আগে এবং মামলার শাস্তি হওয়ার আগে নিয়ম অনুযায়ী কাউকে অপরাধী বলা যাবে না। 

আওয়ামী লীগের সৎ সাহস আছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, জেলার জেনারেল সেক্রেটারি রিমান্ডে, এই রকম উদাহরণতো বিএনপির আমলে, এরশাদের আমলে ছিল না। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, অ্যাড. আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার প্রমুখ।

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়