ঢাকা, সোমবার   ০৮ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২৪ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে নার্সারিতে বদলে গেল আল আমিনের ভাগ্য

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৪৮, ৫ জুলাই ২০২৪  

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে নার্সারিতে বদলে গেল আল আমিনের ভাগ্য

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে নার্সারিতে বদলে গেল আল আমিনের ভাগ্য

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে নার্সারিতে ভাগ্য বদলে গেল আল আমিন নামের এক যুবকের। তার বাড়ি উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের বীর হাজিপুর গ্রামে। বর্তমানে দূর-দূরান্ত থেকে তার নার্সারি থেকে চারা কিনতে আসছে বৃক্ষ প্রেমীরা। আর এতে লাভের মুখ দেখছেন আল আমিন। 

জানা গেছে, মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা আল আমিন নার্সারি করার স্বপ্ন দেখেন ছোটবেলা থেকেই। ছোটবেলা থেকেই গাছের প্রতি ছিলো ভালোবাসা। কোথাও গাছ পেলে সেই গাছ রোপণ করতেন বাড়ির আঙিনায়। শুরুতে শখের বসে নার্সারি করার স্বপ্ন। এরপর পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়িতেই ছোট পরিসরে গাছ রোপণ করেন। সেখান থেকেই গাছের চারা রোপণ করার বিভিন্ন পদ্ধতি আয়ত্ব করা শুরু করেন মো. আল আমিন । 

এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে মাত্র ২৫ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করেন নার্সারি। ১০ শতাংশ জমিতে শখের বসে নার্সারি করেন। পরে  ২০১৮ সালে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার বীর হাজিপুর এলাকায় ১৫০ শতক জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ নিয়ে বড় পরিসরে শুরু করেন নার্সারি। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে নার্সারিতে লাভের মুখ দেখতে পান তিনি। এরপর ধীরে ধীরে নার্সারিতে গাছের প্রজাতির সংখ্যা বাড়াতে থাকেন। 

সময়ের সঙ্গে সঙে মান ভালো হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে গাছ কিনতে আসেন অনেকে। কেউ কেউ গাছের বাগান ঘুরে দেখেন। কেউ গাছ কিনে নেন। শখের নার্সারি একসময় বাণ্যিজ্যিকভাবে শুরু করেন। এই নার্সারিতে আয়ের উৎস খুঁজে পান মো. আল আমিন । এরপর আর তাকে পেছনে তাকাতে হয়নি। কয়েক বছরে নির্বিঘ্নে গাছের চারা রোপণ ও বিক্রি করে লাভবান হতে থাকেন তিনি। এছাড়াও কর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে বেকার যুবকদের। ছেলে-মেয়ে নিয়ে নার্সারির উপর নির্ভর করেই জীবপনযাপন করছেন মো. আল আমিন ।

আল আমিন জানান, বর্তমানে ১৫০ শতাংশ জমিতে নার্সারি রয়েছে। এবছর এই জায়গায় বিভিন্ন বনজ, ফলদ, ঔষধি ও ফুলের চারা রোপণ করেছেন। এর মধ্যে এ বছর তিনি তার নার্সারিতে নারিকেল ও সুপারি চারা বিক্রি করেছেন। তার এখানে ভিয়েতনাম ও বার্মার নারিকেল ও সুপারি চারা রয়েছে। 

আমের জাতের মধ্যে সূর্যডিম, হাড়িভাঙ্গা, ল্যাংড়া, আম্রপালি, হিম সাগর, গুটি ফজলসহ প্রায় ৩০টি জাতের চারা রয়েছে। ফুলের মধ্যে থাই গোলাপ, রজনীগন্ধা, চায়না টগর, হাসনাহেনা, বকুল, কৃষ্ণচূড়াসহ প্রায় শতাধিক প্রজাতির চারা রয়েছে। এছাড়াও আছে বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি গাছও। 

তিনি আরো জানান, জীবিকার তাগিদে এই নার্সারিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। পরিবারের অভাব-অনটনেও কখনোই নার্সারির স্বপ্ন দেখা বন্ধ হয়নি। বিগত বন্যার পানিতে গাছের চারা ভেসে গেলেও তার স্বপ্ন কখনোই তাকে পেছনে ফিরতে দেয়নি। স্বপ্নবাজ হওয়ায় বার বার লোকসানের মুখে পড়েও আবারো নতুন করে শুরু করেছেন নার্সারি। গাছের চারা বিক্রি করে ছেলে মেয়ে নিয়ে অতিকষ্টে দিনাদিপাত করেছেন। এই নার্সারিতে কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েকজন বেকার যুবকের। নার্সারির জন্য তারাও ভাগ্যের চাকাটা ঘুরিয়েছেন। 

আল আমিনের দাবি, কৃষি বিভাগ যদি সহযোগিতা করেন তাহলে তিনি আরো এগিয়ে যেতে পারবেন। 

উপজেলা কৃষি অফিসার একেএম শাহজাহান কবির জানান, বিভিন্ন এলাকায় যারা নার্সারি করেছেন, তাদের নার্সারি নিয়মিত পরিদর্শন করা হচ্ছে। এছাড়াও নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়। বৃক্ষমেলায় তাদের চারা গাছ বিক্রি করারও সুযোগ রয়েছে।  

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়