ঢাকা, রোববার   ২৩ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ১০ ১৪৩১

কাল পবিত্র ঈদুল আজহা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:২২, ১৬ জুন ২০২৪  

কাল পবিত্র ঈদুল আজহা

কাল পবিত্র ঈদুল আজহা

ত্যাগের মহিমায় চিরভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে আগামীকাল সোমবার। বাংলাদেশের হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে এ ঈদ উদযাপিত হয়। ঈদুল আজহা ইসলাম ধর্মের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব। ধর্মীয় বিধান অনুসারে এ ঈদে পশু কোরবানি করা হয় বলে সবার কাছে ‘কোরবানির ঈদ’ নামেই পরিচিত।

এই ঈদে সামর্থ্য অনুযায়ী উট, গরু, মহিষ, দুম্বা, ছাগল ও ভেড়া কিনে কোরবানির মাধ্যমে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য অনেকেই গ্রামের বাড়িতে গেছেন। কোরবানির ঈদে পশু কেনা, তার যত্ন-পরিচর্যাতেই ঈদের মূল প্রস্তুতি ও আনন্দ। রাজধানীর অনেকে কোরবানিদাতা পছন্দের পশুটি কিনে ফেলেছেন। অনেকে সুবিধামতো দামে পছন্দের পশুটি কেনার জন্য বিভিন্ন হাটে যাচ্ছেন। আজ পশু ক্রেতা-বিক্রেতাদের চাঁদরাত। রাত পোহালেই ঈদ।

আল্লাহতায়ালার প্রতি হজরত ইব্রাহিমের (আ.) অপার আনুগত্য ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজ পুত্রকে কোরবানি করতে উদ্যত হয়ে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের যে নিদর্শন স্থাপন করেছেন, তাতে সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ রব্বুল আলামিন মুসলিম জাতির জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব করে দিয়েছেন। মুসলিম জাতির পিতার ঐতিহাসিক আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে প্রতিবছর ওই দিনে (১০ জিলহজ) মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়ে আসছে।

আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কাছে প্রিয়বস্তু কোরবানি করার নির্দেশ পেয়ে প্রথমে ১০০ দুম্বা ও পরে ১০০ উট কোরবানি করার পরও একই নির্দেশ পাওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েন হজরত ইব্রাহিম (আ.)। অবশেষে উপলব্ধি করেন- তাঁর সবচেয়ে প্রিয় তো পুত্র ইসমাইল। অতঃপর আল্লহার সন্তুষ্টির জন্য হজরত ইসমাইলকেই (আ.) কোরবানি করতে উদ্যত হন তিনি। পুত্র ইসমাইল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি হতে রাজি হয়ে যান। কিন্তু মহামহিম আল্লাহ রব্বুল আলামিনের অপার কৃপায় হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়। তা দেখে ইব্রাহিম (আ.) বিচলিত হয়ে পড়লে আল্লাহতায়ালা জানিয়ে দেন, পিতা-পুত্রের আত্মোৎসর্গের এই প্রচেষ্টাকে তিনি আত্মোৎসর্গের নিয়ত হিসেবে কবুল করে নিয়েছেন। এ জন্যই পিতার হাতে পুত্রের কোরবানি হতে না দিয়ে বেহেশত থেকে দুম্বা পাঠিয়ে কোরবানি হিসেবে কবুল করে নিয়েছেন। এ অনন্য ঘটনার স্মরণে প্রচলিত হয় কোরবানি। সেই ত্যাগের মহিমার চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে মুসলিম জাতি জিলহজ মাসের ১০ তারিখে সামর্থ্য অনুযায়ী উট, গরু, মহিষ, দুম্বা, ছাগল ও ভেড়া কিনে কোরবানি করে থাকেন। ইসলামের পরিভাষায় কোরবানি হলো- একমাত্র আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে তারই নামে নির্দিষ্ট পশুকে জবাই করা। মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে জবাই করা পশুর গোশত বা রক্ত কিছুই পৌঁছায় না, কেবল নিয়ত ছাড়া। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে ‘এগুলোর গোশত আমার কাছে পৌঁছায় না। কিন্তু তোমাদের তাকওয়া পৌঁছে যায়।’ ঈদুল আজহার অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে- আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় মনের পশু অর্থাৎ ‘লোভ’ ও ‘কুপ্রবৃত্তি’কে পরিত্যাগ করা। তাই এ ঈদে ধনী ও সামর্থ্যবানরা পশু কোরবানি করলেও গরিবরাও সে আনন্দে সমান অংশীদার। কারণ ইসলামের শরিয়তি বিধান মোতাবেক কোরবানির গোশত সমান তিন ভাগে ভাগ করে একভাগ নিজের জন্য রাখতে পারেন কোরবানিদাতারা। অন্য দুইভাগের একভাগ বিলিয়ে দেন গরিব-দুঃখীদের মধ্যে। অন্য একভাগ বিতরণ করেন আত্মীয়-পরিজনের কাছে। এভাবেই নিজের কেনা পশুর গোশত বিতরণের মাধ্যমে লোভকে পরিত্যাগ করে আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়