এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো নিয়ে যা জানা গেল

সারাদেশে ৩০ জুন থেকে একযোগে শুরু হচ্ছে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। তবে বন্যা পরিস্থিতির কারণে সিলেট বিভাগের ৪টি জেলায় পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। ৯ জুলাই থেকে যে পরীক্ষাগুলো হওয়ার কথা ছিল, সেগুলো যথারীতি হবে বলে তখন জানানো হয়েছিল। যেহেতু এখন বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, তাই যথারীতি নির্দিষ্ট তারিখ থেকে পরীক্ষাগুলো হবে।বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান রমা বিজয় সরকার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। ৮ জুলাইয়ের আগে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনো কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র থাকলেও পরীক্ষার আগেই সেগুলো খালি হয়ে যাবে বলে আশা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের।

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ নুরুজ্জামান বলেন, এ উপজেলায় চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট পরীক্ষার্থী ৪৩২। একটিই পরীক্ষাকেন্দ্র- কাছিম আলী সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটি এখন বন্যাদুর্গত ব্যক্তিদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যেহেতু বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, তাই আশ্রয়কেন্দ্রও দ্রুত খালি হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষা গ্রহণে কোনো সমস্যা হবে না।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, এ বোর্ডের আওতাধীন চারটি জেলার ৩০৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৮২ হাজার ৭৯৫ জন পরীক্ষার্থী এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে। এর মধ্যে ৩৩ হাজার ৫৯০ জন ছাত্র এবং ৪৯ হাজার ২০৫ জন ছাত্রী। এর মধ্যে সিলেটে ৩৫ হাজার ৬২০, সুনামগঞ্জে ১৫ হাজার ৬৬৪, মৌলভীবাজারে ১৬ হাজার ৫০৮ ও হবিগঞ্জে ১৫ হাজার ৩ জন পরীক্ষার্থী আছে। বিভাগের ৪ জেলায় মোট ৮৭টি পরীক্ষাকেন্দ্র আছে। এর মধ্যে সিলেটে ৩৩টি, সুনামগঞ্জে ২২টি, মৌলভীবাজারে ১৪টি ও হবিগঞ্জে আছে ১৮টি।

বোর্ড সূত্র জানায়, সিলেটে ৮ জুলাই পর্যন্ত পরীক্ষা পেছানোয় বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র, বাংলা (আবশ্যিক) দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি (আবশ্যিক) প্রথম পত্র ও ইংরেজি (আবশ্যিক) দ্বিতীয় পত্র- এই চার বিষয়ের পরীক্ষা পরে অনুষ্ঠিত হবে। তবে ৯ জুলাই থেকে যথারীতি আগের রুটিনে পরীক্ষা হবে। ঐ দিন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আবশ্যিক) বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান রমা বিজয় সরকার বলেন, ৩০ জুন থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল, সেসব বিষয়ের নতুন রুটিন আগামী সপ্তাহে দেওয়ার সম্ভাবনা আছে।

গত ২৯ মে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা দেখা দেয়। ৮ জুনের পর বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। সবশেষ ১৭ জুন থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে সিলেট ও সুনামগঞ্জে দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এতে সিলেট নগরের ২৪টি ওয়ার্ডসহ ১৩টি উপজেলা ও সুনামগঞ্জের ১৩টি উপজেলা কমবেশি প্লাবিত হয়। এ অবস্থায় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি এক বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট বিভাগের এইচএসসি, মাদরাসা ও কারিগরি পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে।