ঢাকা, রোববার   ৩০ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৬ ১৪৩১

আমে মুগ্ধ ১৩ দেশের রাষ্ট্রদূত

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:১১, ২৮ জুন ২০২৪  

আমে মুগ্ধ ১৩ দেশের রাষ্ট্রদূত

আমে মুগ্ধ ১৩ দেশের রাষ্ট্রদূত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম ও বাগানের পরিবেশ দেখে মুগ্ধ হলেন বাংলাদেশে কর্মরত ১৩টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা। দেশগুলো হলো- ব্রুনাই দারুস সালাম, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার ও লিবিয়া। গতকাল আমের শহর চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসে আমের বাগান দেখে মুগ্ধ হয়েছেন তাঁরা। বাংলাদেশে উত্তম কৃষি চর্চায় ফল ও ফসল উৎপাদন হওয়ার বিষয়টি নিজ নিজ দেশের ক্রেতাদের অবহিত করবেন বলে জানান রাষ্ট্রদূতরা। আম বাগান পরিদর্শনের আয়োজন করে কৃষি মন্ত্রণালয়। উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে নিরাপদ আম উৎপাদন হওয়ার বিষয়টি রাষ্ট্রদূতদের কাছে তুলে ধরা হয়। রাষ্ট্রদূতরা বাগান ঘুরে দেখেন। পরিবেশ দেখেন। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুস শহীদের নেতৃত্বে অন্যান্যের মধ্যে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. আবদুল ওয়াদুদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও ছিলেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে নাচোল উপজেলার কান্দবোনা গ্রামে নূর আলম সিদ্দিকীর আম বাগান পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রদূতরা। যেদিকে চোখ যায় আম আর আম। ডালে ডালে ঝুলছে নানা জাতের আম। ফ্রুটব্যাগিং করে ঢেকে রাখা হয়েছে অনেক আম। পোকামাকড়ের আক্রমণ মোকাবিলায় নেওয়া হয়েছে এমন ব্যবস্থা। আমবাগান ঘুরে সিঙ্গাপুরের চার্জ দ্য আ্যফেয়ার্স শীলা পিললাই বলেন, বাগান দেখে আমি অভিভূত। সিঙ্গাপুরে ভারতের আম যায়। দামও একটু বেশি। সাশ্রয়ী দামে ভালো কোয়ালিটি পাওয়া গেলে বাংলাদেশ কেন নয়। আমরা যেহেতু উৎপাদন করি না- এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালো সুযোগ পেতে পারে। জাতিসংঘের কৃষি খাদ্য সংস্থা বাংলাদেশ প্রতিনিধি জিয়াউ কুন শী বলেন, এখানে প্রথমবার দেখলাম আমের বাগান। আম ভ্যালু চেইন প্রোডাক্ট। এফএও গুরুত্ব দিয়ে গ্যাপ অনুসরণে সহযোগিতা করবে। বাংলাদেশের কৃষি বদলে গেছে। গ্যাপ মেনটেইন করছে। এটি বিশ্বকে জানাতে চায় এফএও। কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুস শহীদ বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রদূতরা এসেছেন। মূল উদ্দেশ্য হলো রাষ্ট্রদূতদের আম বাগান দেখিয়ে উৎসাহিত করা। তাদের সার্বিক পরিস্থিতি দেখানো, আমাদের দেশের মিষ্টি আমগুলোর তথ্য জানানো। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন- কৃষি, বাণিজ্য এবং পররাষ্ট্র তিন মন্ত্রণালয় মিলে আমরা আমাদের আমকে ব্র্যান্ডিং করব। যাতে বিদেশে রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পায়। আমাদের বহু সমস্যা আছে, থাকতে পারে। সমাধানও করতে হবে। আমাদের রপ্তানি সমস্যা হলো গ্যাপ। যা আমরা শুরু করেছি। সামনে কোনো সমস্যা থাকবে না। বিশ্বের আম উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। দেশের ২ লাখ ৩৫ হাজার ৩৪৮ একর জমিতে আম চাষ হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ লাখ ২ হাজার ৯৬৮ হেক্টর জমিতে ২৪ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ মে. টন আম উৎপাদিত হয়। আম পরিবহন, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ এবং উৎপাদন পর্যায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার না করায় উৎপাদিত আমের ২৫-৩০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ হাজার ৭৫৭ মে. টন এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৩ হাজার ৪৫.৪৩৭ মে. টন আম রপ্তানি হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমের কোয়ালিটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমাদের মার্কেটিং করতে হবে। কৃষি সচিব বলেন, আমরা উত্তম কৃষি চর্চা শুরু করেছি। এটি সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা দেখলেন। আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। বিএআরসি চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, আমাদের আমের কোয়ালিটি নম্বর ওয়ান। তবে মার্কেট দখল করে আছে অন্যরা। রপ্তানি করার যে চাহিদা সেটা আমরা পূরণ করছি। এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ- তা বিশ্বে তুলে ধরতে উন্নয়নশীল সহযোগীদের দেখালাম। ১০টা সবজি ৫টা ফলে আমরা এই চর্চা চালু করেছি।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়