ঢাকা, শুক্রবার   ০৫ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২০ ১৪৩১

আবার শুরু হয়েছে পায়রা ও আদানির বিদ্যুৎ উৎপাদন

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:০৭, ২ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ০৯:৫৫, ৩ জুলাই ২০২৪

আবার শুরু হয়েছে পায়রা ও আদানির বিদ্যুৎ উৎপাদন

আবার শুরু হয়েছে পায়রা ও আদানির বিদ্যুৎ উৎপাদন

দ্বিতীয় ইউনিটের রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শেষে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পুরো সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। অন্যদিকে কারিগরি ত্রুটিতে বন্ধ হওয়া ভারতের আদানি গ্রুপের একটি ইউনিটের মেরামতের পর সেটি থেকেও শুরু হয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। তবে অন্য ইউনিটটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রয়েছে এখনো।

গতকাল সোমবার দুটি ইউনিট উৎপাদনে আশায় জাতীয় গ্রিডে আবারও প্রায় ১ হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের লোডশেডিং কমবে বলে আশা করছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা। যদিও ঝড়ে ভাসমান একটি এলএনজি টার্মিনালের ক্ষতি হওয়ায় বিভিন্ন খাতে গ্যাস সংকটের পাশাপাশি কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

দেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং উৎপাদনের শীর্ষে থাকা পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিটের রক্ষণাবেক্ষণ শেষ হওয়ার পর গতকাল বিকেল ৪টার দিকে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সিনক্রোনাইজ করা হয়। এরপর আস্তে আস্তে এর উৎপাদন বাড়তে থাকে। গত ২৫ জুন ওই ইউনিটের রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শুরু হয়।

পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্ল্যান্ট ম্যানেজার শাহ আবদুল মোওলা বলেন, ‘দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আছে। অন্য ইউনিটের রক্ষণাবেক্ষণ কাজও শেষ। এখন আমরা চাহিদা অনুযায়ী পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে প্রস্তুত।’

অন্যদিকে আদানি গ্রুপের এক কর্মকর্তা জানান, কারিগরি ত্রুটিতে বন্ধ হওয়া একটি ইউনিটের মেরামত শেষে সোমবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে আবারও বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। বর্তমানে গড়ে প্রায় সাড়ে ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ করছে কেন্দ্রটি। বন্ধ থাকা অন্য ইউনিটের রক্ষণাবেক্ষণ কাজ আগামী ৬-৭ তারিখে শেষ হতে পারে। তখন দুটি ইউনিট থেকে পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ভারতের ঝাড়খন্ডে আদানি গ্রুপের নির্মিত ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রায় ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করে বাংলাদেশ। ঈদের ছুটিতে চাহিদা কম থাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৮০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট রক্ষণাবেক্ষণে যাওয়ায় উৎপাদন অর্ধেকে নেমে যায়। অন্য ইউনিটে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় হঠাৎ করে মঙ্গলবার থেকে উৎপাদন কমে ৩৭০ মেগাওয়াটে দাঁড়ায়। শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে সেটিও বন্ধ হয়ে যায়।

সাগরে এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উৎপাদন সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও চাহিদানুরূপ গ্যাসের অভাবে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালানো যাচ্ছে না। উচ্চমূল্যের তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালিয়ে লোডশেডিং পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। এখন সে চাপ কিছুটা কমবে বলে আশা করছেন কর্মকর্তারা।

পিডিবি সূত্র জানায়, বর্তমানে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রতিদিন অন্তত ১১০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের দরকার। কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে গড়ে ৯৫ কোটি ঘনফুট। ফলে অনেক গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

গত ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান দুই এলএনজি টার্মিনালের একটি (সামিট গ্রুপের) ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আগে থেকেই সংকটে থাকা গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। বর্তমানে দৈনিক অন্তত ৪২০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে গড়ে ২৯৫ কোটি ঘনফুট সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ থাকায় গত এক মাস ধরে দিনে গ্যাস সরবরাহ কমেছে আরও প্রায় ৬০ কোটি ঘনফুট। এতে পরিবহন, শিল্প ও বাসাবাড়িতে গুরুতর সংকট দেখা দিয়েছে। ফিলিং স্টেশনগুলোতে গাড়ির লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। চলতি মাসে ক্ষতিগ্রস্ত টার্মিনালটি মেরামতের পর চালু হওয়ার আশা করছেন কর্মকর্তারা।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়