নিত্যপণ্য আমদানিতে ভারত মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি

নিউজ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ০৯:৪৭ পিএম, ২৭ জুন ২০২৪ বৃহস্পতিবার

নিত্যপণ্য আমদানিতে ভারত মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি

নিত্যপণ্য আমদানিতে ভারত মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি

নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য আমদানিতে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি সই হচ্ছে বলে জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এ চুক্তি সই করবে। টিটু বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির সরবরাহ যেন নিরবচ্ছিন্ন থাকে সেজন্য ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে যাচ্ছি। মিয়ানমার অনেক বড় দেশ। তাদের অনেক কৃষিপণ্য উদ্ধৃত্ত আছে। তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে একটি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী মাসে চুক্তিটা সই করতে চেষ্টা করব। এই চুক্তির হলে মিয়ানমার থেকেও পেঁয়াজ, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো আমদানি করা যাবে।

গতকাল বুধবার সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। সচিবালয় কাভার করা সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে। বিএসআরএফ সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাবের সভাপতিত্বে সংলাপ সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের সঙ্গে দ্রুত কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট বাংলাদেশের সঙ্গে করবেন। চীনের সঙ্গে আমাদের স্টাডি সম্পূর্ণ হয়েছে, চায়না একটি এফটিএ করার জন্য উদ্যোগী। আসিয়ান কান্ট্রিগুলোর সঙ্গেও যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছি। সীমান্ত হাট প্রতিষ্ঠার দিকে নজর দেয়া হবে জানিয়ে আহসানুল ইসলাম বলেন, কোভিডের জন্য কিছুটা স্থগিত ছিল, আবার বর্ডার হাটের দিকে নজর দেব। দুই সরকারেরই বর্ডার হাটের ব্যাপারে আগ্রহ আছে। অনেক দুর্গম এলাকায় বর্ডার আছে। সেখানে জনবিচ্ছিন্ন মানুষ আছে, তাদের সুবিধা বাড়ানোর জন্য কয়েকটা বর্ডার হাট করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত দুর্গম বর্ডার এলাকায় বর্ডার হাট প্রতিষ্ঠা করব। এতে আমাদের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য অনেক সহজ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী।

বোতলজাত পানির দাম বাড়ানো নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি প্রথম শুনলাম এটা। খবর নেব এটা, কেন বাড়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

সাবান ও গুঁড়া সাবানের দাম নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাবান নিয়ে এর আগে কেউ প্রশ্ন করে নাই। এটা নিয়ে কোনো কিছু করণীয় আছে কিনা সেটা দেখব। আপনার বিষয়টি আমি গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। অনেক বিষয় আছে সেটা আমাদের কিনা সেটা দেখতে হবে। শিল্পগুলো শিল্প মন্ত্রণালয়ের। তাই সাবানের দাম নির্ধারণের এখতিয়ার আমাদের আছে কিনা সেটা দেখে আপনাদের জানাব।

বাজারে আলুর দাম ৭০ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি এটা আপনি স্বাভাবিক মনে করেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাজারে আলু, পেঁয়াজ পর্যাপ্ত আছে এটাকে স্বাভাবিক বলে মনে করি। যে কোনো প্রাইজ নির্ভর করে বাজারের চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। যদি সরবরাহ করতে পারি তাহলে দাম কমে যাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত বাজারে আলু ও পেঁয়াজ কম দামে সরবরাহ না থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত বাজারে যে মূল্য আছে সে মূল্যকে মূল্য হিসেবে দেখতে হবে। চাইলেই কাউকে আইন করে বলতে পারব না। পেঁয়াজের দাম এত ...। সেটা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বলতে পারবে। কৃষি উৎপাদিত পণ্যের মূল্যনির্ধারণ করে দেয়ার ‘মেকানিজম’ আমার জানা নাই। আমার জানা আছে, যদি দাম বেড়ে যায়, তাহলে আমদানি করে কম দামে বাজারে সরবরাহ করলে দাম কমে যাবে।

মানুষের ক্রমক্ষমতা বাড়ছে- এমন মন্তব্য করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গত তিন মাসে দুই বিলিয়ন করে রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত বছরের বেশি। এ পুরো দুই বিলিয়ন একেবারে গ্রামের অর্থনীতিতে গিয়ে হিট করে। এ রেমিট্যান্সটা শহরে আসে না, কোনো ব্যাংকে আসে না, গ্রামে চলে যায়। গ্রামের ওই সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা এই কারণেও বাড়ে।

নির্ধারিত আয়ের মানুষরা কষ্ট আছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রামের মানুষ যারা উৎপাদন করে তারা কিন্তু শহরের ফিক্সড (নির্দিষ্ট) ইনকামের লোকের চেয়ে ভালো আছে। গ্রামে যারা অটো চালায় তারাও কিন্তু একটা গরু বা ছাগল পালন করে। বিকালে একটু খেতে যায় শস্য দেখতে। তাদের কিন্তু মাল্টিপল ইকনোমিক অ্যাক্টিভিটি আছে। খুব বেশি চাপে আছে ফিক্সড ইনকামের (নির্ধারিত আয়) শহর বেইজড লোকগুলো। তাদের জন্য টিসিবিসহ অন্যান্য কর্মসূচি আছে।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে আমাদের স্বল্পোন্নত দেশের সুবিধাগুলো যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য ডব্লিউটিওসহ বিভিন্ন জোটের সঙ্গে, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিগুলো করছি। ইউরোপীয় ইউনিয়নে কোটা ফ্রি, ডিউটি ফ্রি সুবিধা যেন অব্যাহত থাকে সেই ব্যাপারেও কাজ চলছে।

ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনেননি, চামড়ার দাম পাওয়া যায়নি- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দায়িত্ব নেয়ার পর এটা আমাদের প্রথম বছর ছিল। চামড়ার দাম নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলাম- ঢাকার বাইরে একটি গরুর লবণযুক্ত চামড়া এক হাজার টাকা আর ঢাকায় এক হাজার ২০০ টাকা। ৬৪ জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোন জেলায় কত চামড়া কেনা হলো, কতগুলো সংরক্ষিত, কতগুলো অবিক্রিত- সেই বিষয়ে একটা পরিসংখ্যান নেব। মনিটরিং করা হবে। মনিটরিং করে যে ঘাটতি আছে সেগুলো যেন আগামী বছর পূরণ হয় সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তবে এ বিষয়ে লাইন মিনিস্ট্রি হলো শিল্প মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে শুধু মনিটরিংই করতে পারি, কাউকে কেনায় বাধ্য করতে পারে শিল্প মন্ত্রণালয়। এর সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় যুক্ত রয়েছে। শুধু সমন্বয়টা আমরা করব।